ভি (V) নামটা শোনার পর একটু অদ্ভুত মনে হতেই পারে। ইংরেজির শুধু একটা অক্ষর নিয়েই মুভি, নিঃসন্দেহে বেশ ইন্টারেস্টিং হওয়ার কথা। তাছাড়া মুভিটিতে রয়েছে সব বড় বড় স্টারদের মুখ। প্রথমার্ধ কিছুটা স্লো হলেও দ্বিতীয়ার্ধে অসাধারণ সাসপেন্স থ্রিলারে ভরপুর ছিল মুভিটি। পরিচালকের কথা বলতে গেলে অসাধারণ একজন সফল পরিচালক Mohana Krishna Indraganti, শুধু তাই নয়, উনি একাধারে এই মুভির লেখকও। তার ঝুলিতে রয়েছে অসংখ্য মুভি, যার মধ্যে অন্যতম- Gentleman, Sammohanam, Ami Tumi. পরিচালক Mohana Krishna Indraganti মানেই যেন ন্যানি, আর সুধীর বাবু। তার রচনার অধিকাংশ মুভিতেই দেখা মিলেছে ন্যানি আর সুধীর বাবুকে। তবে দু’জনে প্রথমবার একত্রিত হয়েছে “ভি” মুভিতে এসেছে।
ভি মুভি টি পরিচালনা করেছেন মোহনা কৃষ্ণ ইন্দ্রগন্তী। শুধু এই মুভি ই নাহ এছাড়াও তার অনেক মুভি নির্মাণ করা আছে ন্যানী কে নিয়ে। আর সেই মুভি গুলো সম্পর্কে আমরা ইতিপূর্বে আপয়াদের কে জানিয়ে দিয়েছি। তো আসুন আমরা এছাড়া ও ভি মুভিটির সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য জেনে নেয়।
মুভিঃ ভি
ইন্ডাস্ট্রিঃ তেলেগু
ভাষাঃ তেলেগু
দেশঃ ভারত
রানটাইমঃ ১৪০ মিনিট
রিলিজ সালঃ ২০২০
আইএমডিবি রেটিংঃ ৬.৭/১০
পার্সোনাল রেটিংঃ ৭/১০
পরিচালকঃ মোহনা কৃষ্ণ ইন্দ্রগন্তী
কাস্টঃ ন্যানি, সুধীর বাবু পসানি, নিভেথা টমাস, অদিতি রাও হায়দা
জনরাঃ অ্যাকশন, ক্রাইম, থ্রিলার
তেলেগুর জনপ্রিয় নায়ক ন্যানিকে সবাই ন্যাচারাল স্টার বলেই ডাকে। কারণ তার অভিনয়, মুভি সিলেকশনে সবসময় একটা অতিপ্রাকৃতিক বিষয় লক্ষ্য করা যায়। সামাজিকতা, পরিবার, রোমান্টিক জনরায় তার সুনিপুণ অভিজ্ঞতার ছাপ অনেক আগেই দেখিয়ে দিয়েছে। তবে এবার ভিন্ন লুকে, একেবারে ড্যাশিং স্টাইলে। গালভর্তি দাঁড়ি, মুখে কাটি আর অসাধারণ ড্রেস-আপ সবমিলিয়ে একেবারে রকস্টার বলা যায়।
ন্যানির অভিনয় ছিল বরাবরের মতোই অসাধারণ। কিন্তু আজকে বলব ন্যানির ফার্স্টক্লাস লুকের আড়ালে পড়ে যাওয়া আরেক অভিনেতার কথা, যার নাম সুধির বাবু। মুভির শুরুতেই ধুমধাম অ্যাকশন সিন দিয়ে শার্ট খুলে বডি দেখানোর সুযোগ হাসিল করে আগমন ঘটে এক পুলিশ অফিসারের, যা আমাদের সুধির বাবু। ভিলেন রুপে মাঝেমাঝে দেখা গেলেও এবার পুলিশ অফিসারের দায়িত্ব নিয়ে বেশ ফাটিয়ে দিয়েছে। সুধীর বাবু অসংখ্য মুভিতে কাজ করেছেন৷ কখনো পার্শ্বচরিত্রে কিংবা কখনো কেন্দ্রীয় চরিত্রে। তবে তার অভিনয় ছিল বরাবরই মতো চমৎকার৷ Baaghi মুভির কথা নিশ্চয়ই সবার মনে আছে, অসাধারণ সেই মুভি থেকেই সুধীর বাবুকে আমি আলাদাভাবে চিনেছিলাম।
তাছাড়াও ভেন্নেলা কিশোর, নিভেথা থমাস, অদিতি রাও সবাই যার যার অবস্থানে অসাধারণ অভিনয় করেছে। কিন্তু ভেন্নেলা কিশোর যাকে আমরা সবসময় কমেডিয়ান হিসেবে দেখি, তাকে মুভিতে এক সিরিয়াস রোলে দেখানো হয়েছে। কিন্তু ভেন্নেলাকে কিশোরকে আমি সিরিয়াস রোলের চেয়ে কমেডিয়ান হিসেবেই প্রেফার করি। তাই হয়তো, তার অভিনয়ে কিছুটা ঘাটতি মনে হয়েছে আমার কাছে।
পুলিশ আমাদের সমাজে দুই ধরনের হয়ে থাকে, একদল সাধারণ মানুষকে যন্ত্রণায় পিষে দেয় আর একদল সেই যন্ত্রণা নিজের কাঁধে নিয়ে মানুষকে উদ্ধার করে। আদিত্য (সুধীর বাবু) নামক এক ডিসিপির পরিচিতি আসে তার জনমানব কল্যাণের হাত ধরেই। এক এলাকায় কিছু সন্ত্রাসীদের দাঙ্গা সৃষ্টি করতে দেখা যায়, আর সেখানে ডিসিপি আদিত্য এসে তাদের রক্ষা করে। একদম প্রথমদিকেই এই অ্যাকশন সিন ছিল নজরকাড়া, আর তারপর থেকেই সে চলে আসে সবার মুখে মুখে। মানুষজন তার নাম দেয় “Super Cop”. ঠিক তার পরের সিনেই চলে আসে আদিত্যের নায়িকা। যাকে নিয়ে পুরো মুভিতে আদিত্যের সন্দেহের কোনো কমতি ছিল না।
এদিকে হুট করেই এক পুলিশ সদস্য খুন, তাও আবার নৃশংসভাবে। শরীরের সমস্ত রক্ত বের করে ফেলা হয়েছে। দেখেই বুঝা যাচ্ছিল, কতটা নির্মম আর হিংস্রভাবে যন্ত্রণা দিয়ে তাকে মারা হয়েছে। তাই বাকি খুনের মতো এটাকে সাধারণ খুন বলা যায় না৷ তার উপর আবার খুনির সাথে এক চিরকুটে আদিত্যকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়। তবে খুনি কিন্তু এখানেই থেমে নেয়, একে একে হাতিয়ে নেয় আরও কিছু প্রাণ, যাদের হত্যার স্টাইল এবং জায়গা আলাদা। আদিত্য দিশেহারা হয়ে এদিকসেদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। আর তারপরই শুরু হয়, ইঁদুর-বিড়ালের লড়াই অর্থাৎ চোর-পুলিশের লড়াই। মুভির প্রথমদিকে কিছু স্লো মনে হতে পারে কিন্তু শেষটা একেবারে বাজিমাত ছিল। আর প্রথম দেখায় আপনার কাছে সিরিয়াল কিলিং মনে হতে পারে কিন্তু একটা পর্যায়ে বুঝতে পারবেন আসলে মুভির ভিত্তি ছিল রিভেঞ্জ থ্রিলার। খুব বেশি এক্সপেকটেশন না নিয়ে, ন্যানি এবং তার অভিনয় দেখতে চাইলে আরামসে বসে যেতে পারবেন।
ন্যানি মানেই যেন অসাধারণ কিছু ন্যাচারাল মুভি, কিন্তু এবার যখন সে ভিন্ন লুকে আবির্ভাব হচ্ছে মুভি তো প্রথমদিনেই দেখা লাগে। আরও কিছু টুইস্ট দিলে হয়তো মুভিটা আরও জমে যেত, তবে যা হয়েছে নিঃসন্দেহে একবার দেখে নেয়া যায় এবং আশা করি বেশ ভালো লাগবে।
ধন্যবাদ।