আপনারা যারা মাসুদ রানার ভক্ত, তারা অবশ্যই পড়েছেন ”অগ্নি-পুরুষ” বইটি। যারা সেটাও পড়েন নি, তারা হয়ত পড়েছেন হুমায়ুন আহমেদের ”অমানুষ” বইটি। দুটি বইই একই কাহিনীর ছায়া (জনপ্রিয় লেখক এ.জে. কুইনেলের উপন্যাস ‘ম্যান অন ফায়ার’ থেকে নেয়া) অবলম্বনে রচনা করা হয়েছে। সেই কাহিনী নিয়ে ২০০৪ সালে টনি স্কট পরিচালিত শক্তিমান অভিনেতা ড্যানজেল ওয়াশিংটন এর অভিনয়ে আসে মুভি ম্যান অন ফায়ার।
দেখার আগে পচা টমেটোতে রিভিউ পড়তে গিয়ে ধাক্কা খেলাম বেশিরভাগ রিভিউ এটাকে টাইমওয়েইস্ট মুভি বলছে কারণটা কি? যেখানে ডেনজেল ওয়াশিংটন আর ডাকোটা ফ্যানিং এর মত কাস্ট রয়েছেসবকিছু একপাশে রেখে দেখলাম এবং বুঝলাম বেশিরভাগ বুক অ্যাডাপ্টেশন মুভিক কেন কমজোরি মুভির লিস্টে ঠাঁই নেয়। যারা দেখেননি এগুলো পড়ে যদি মনে করেন মুভিটা ভাল হয়নি সেটা ভুল কোয়েন্টিন টারান্টিনো এটাকে টনি স্কটের সেরা কাজগুলোর একটা হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তবে আমি বলব টনি স্কট মুভিটাকে আরো একটু ডার্ক করে বানাতে পারতেন কিংবা টর্চার করার সিনগুলো আরো নির্মমতা দিয়ে গড়ে তুলতে পারতেন জন ক্রিসির অতীতটাকে দর্শকদের সামনে কিছুটা হলেও তুলে ধরা যেত সবচেয়ে বড় কথা হল টনি বই থেকে মুভি করছেন এটা তার মাথায় তিনি খুব বেশি খেলাননি পরিবর্তন যা এনেছেন তা ইটালি থেকে মেক্সিকো তারপরও সিনেমায় থ্রিল রয়েছে প্রচুর সেই ছোট্ট মিষ্টি ডাকোটা ফ্যানিং ভালই কাজ করেছে ।
মুভিটায় ডেনজেল ওয়াশিংটনকে অনেকে মিস কাস্ট বলেছেন ।আমারো হালকা তেমনই লাগলো । মার্টিন স্করসেসে যেমন ঘনঘন লিও ডিক্যাপ্রিওকে কাস্ট করেন তেমনি টনি স্কটের বেশিরভাগ মুভিতে ডেনজেল ওয়াশিংটনকেই নেন । তার সামর্থ্য নিয়ে কোন প্রশ্নও নেই, কিন্তু জন ক্রিসি রোলে পুরোপুরি ডেনজেল মানিয়ে ওঠতে পারেননি বলে মনে হয়েছে। তবে ক্রিস্টোফার ওয়াকেন এর সাবলীল প্লেবয়মার্কা অভিনয় আমার ভীষণ ভালো লেগেছে । এছাড়া সিনেমাটায় মাফিয়াদের একটা সংশ্লিষ্টতা ছিল সেটাকে আরো একটু গভীর করে দেখালে ভাল হত।তবে মুভি দেখাটাই যদি কারো মূল উদ্দেশ্য হয় এবং থ্রিলারপ্রেমী দর্শক হন তবে এই মুভি তার মনকে ভরাতে সক্ষম হবে।কারণ লুপিতা রামোস আর বডিগার্ড জন ক্রিসির বন্ধুত্বপূর্ণ আন্তরিক ভালবাসার বাঁধনটাকে ভালই সামনে তুলে এনেছেন পরিচালক ।
রিভিউ ক্রেডিটঃ আরভিন আহমেদ