দ্যা হোয়াইট রিবন বাংলা সাবটাইটেল (The White Ribbon Bangla Subtitle) বানিয়েছেন সাইমন এলেক্স। অস্কার নমিনেশন পাওয়া মাস্টারপিস মুভিটি রচনা ও পরিচালনা উভয়ই করেছেন মাইকেল হানেক। আইএমডিবিতে ৭.৮ রেটিং পাওয়া মুভিটি মুক্তি পায় ২০০৯ সালে।
দ্যা হোয়াইট রিবন (The White Ribbon) জার্মান মুভি। কড়া কন্ট্রাস্টের সাদাকালো মিস্ট্রিয়াস ড্রামা সিনেমা। যাহ, এক কথায় প্রকাশ করে দিলাম। কিন্তু এ সিনেমা কি এক কথায় বলা যায়? এ তো সিনেমা না, এ তো উপন্যাস। আড়াই ঘন্টা মনিটরে দেখা জ্যান্ত উপন্যাস। সিকোয়েন্স পাল্টায়, একেক ধরণের মোড এসে হাজির হয়। রোমান্স, আতংক, ভয়, ভালোবাসা কিংবা মানুষের কুৎসিত থেকে কুৎসিততর চিন্তা, আহ, কি তার উপস্থাপন!
সময়টা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কিছু সময় আগেকার ঘটনা। জার্মানির এক প্রত্যন্ত গ্রামে হঠাৎ করে অস্বাভাবিক সব ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে। গ্রামের ডাক্তার ঘোড়া থেকে পড়ে হাত ভেঙে ফেলছেন, তো ব্যারনের বাঁধাকপির ক্ষেত কে যেন কুচি কুচি করে কেটে দিচ্ছে। এ তো মামুলি, একে একে বেড়েই চলেছে ঘটনার ডালপালা। কে বা কারা করছে এসব? আর কেনই বা করছে এসব? মেলাতে গেলে অনেক কিছুই মেলে, আবার অনেক কিছুই মেলে না। এর মধ্যে আবার ক্ষণে ক্ষণে আসছে ভালোবাসা, ঘৃণা, অবিচার, প্রেম। পুরো একটা গ্রাম, কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটায় গ্রামের কয়েকটি পরিবারের ওলট-পালট হয়ে যাওয়া জীবনের গল্প। নাহ, একটা গল্প না, অনেকগুলো গল্প, বিচিত্র সব গল্প। একটা বিষয় ভালো লেগেছে যে, পরিচালক এত কিছু দেখিয়েছেন কিন্তু মূল কাহিনীর উত্তেজনাটা এতটুকু কমতে দেননি।
অনেকেই মনে করেন সিনেমায় নাকি একটা চরিত্রকে উপন্যাসের মতো করে সম্পূর্ণ বিন্যাস করা যায় না। কে বলে এই বোকা কথা? তাকে The White Ribbon দেখিয়ে দেবেন তো! যথোপযুক্ত চরিত্রায়ন আর তার সাথে প্রত্যেকটা চরিত্রের দুর্দান্ত ডায়লগ থ্রোয়িং আর অভিব্যক্তি।
সিনেমাটোগ্রাফি এই সিনেমার শক্তিশালী যায়গা। ট্র্যাকিং শটের প্রতি এমনিতেই দুর্বলতা কাজ করে যেটার ব্যবহার এখানে উপযুক্তভাবেই করা হয়েছে। এডিটিংও কাজ হয়েছে যথেষ্ট ভালো। মাত্র দেখানো হচ্ছে, একজন আত্মহত্যা করতে যাচ্ছে, পরের শটেই দেখানো হলো কফিনে একটা লাশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কিন্তু সেটা যে আসলে আত্মহত্যা করতে চাওয়া ব্যাক্তির লাশ না, তা এর পরের শটেই আবার দেখিয়ে দেওয়া হয়। এভাবে ছোট ছোট সাসপেন্স তৈরী করে পুরো সিনেমার উত্তেজনা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বহুগুনে।
সংলাপ নিয়ে দু’কথা না বললেই নয়। সিনেমার সংলাপকে চরিত্রগুলোর ম্যাচুরিটির মাত্রা পরিমাপক হিসেবে ব্যাবহার করা হয়েছে। শব্দ নিয়ে কিছু বলার নেই। কোনরকম ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া সিনেমা এটা। কোনোরকম মানে একদমই নেই। একদম কোন মিউজিক দেওয়া হয় নাই যা এই সিনেমার শিল্পগুণ এতটুকু কমাতে পারেনি। তবে শব্দের কাজ এখানে অসাধারণ! ভয়ের সময় ঢোক গেলা আর প্রেমিকের সামনে ঢোক গেলার শব্দে যে তফাৎ আছে, গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সেই ক্ষুদ্র ব্যাপারেও।
মাইকেল হানেক পরিচালিত অসাধারণ এই চলচ্চিত্রটি কান চলচ্চিত্র উৎসবের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পুরষ্কার পাম ডি’অর ছাড়াও গোল্ডেন গ্লোব শ্রেষ্ঠ বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র, জার্মান ফিল্ম এওয়ার্ড, ইউরোপিয়ান ফিল্ম এওয়ার্ড, বাফটা ও অস্কার মনোনয়ন ছাড়াও অনেকগুলো পুরষ্কার বাগিয়ে নিয়েছে। কেন না? মাস্টারপিস তো একেই বলে!
This website uses cookies.