হায়দার মুভিটির বাংলা সাবটাইটেল (Haider Bangla Subtitle) বানিয়েছেন সাইমন এলেক্স। হায়ডার মুভিটি পরিচালনা করেছেন বিশাল ভরদ্বাজ। এত সুন্দর একটা গল্পের লেখক ছিলেন বিশাল ভরদ্বাজ। ২০১৪ সালে হাইডার মুক্তি পায় । ইন্টারনেট মুভি ডাটাবেজে এখন পর্যন্ত ৪৬,৩১৯টি ভোটের মাধ্যেমে ৮.১ রেটিং প্রাপ্ত হয়েছে মুভিটি। ৪৮০ মিলিয়ন রুপি বাজেটের হাইডার মুভিটি বক্স অফিসে ৭৯১.৬৭ মিলিয়ন রুপি আয় করে।
সত্যি বলতে ২০১৪ সালটা বলিউডের ইতিহাসে অন্যতম বাজে একটা সাল গেলো। কেন যেন এই বছর কোন হিন্দী মুভি দেখে মন থেকে ওয়াহ কথাটা বের হয় নি। বস্তা পচা কিছু শত কোটির মুভির মাঝে হঠাৎ পেলাম হায়দার’ নামের সেই মুভিটি। কে জানতো আমার জন্য হয়তো বছরের শেষ দিকেই সেই ওয়াহ কথাটা বের করার সরঞ্জাম তৈরি হচ্ছিল! বেশী কথা না বাড়িয়ে তাই আসল কথায় আসি।
যত ধরনের সিনেমা পৃথিবীতে তৈরি হয়, তার মাঝে সবচেয়ে কঠিন সম্ভবত সাহিত্য থেকে সিনেমা নির্মাণ। পরিচালক বিশাল ভারদ্বাজ কাজটি করেছেন সাহস করে এবং বলা বাহুল্য তিনি ভালো করেছেন। কিছু না করে নির্ভুল থাকার চেয়ে মনে হয় সাহসিকতার সাথে কিছু ভুল করা ভালো। শেক্সপিয়ার এর হ্যামলেট কে অ্যাডাপ্ট করেছেন তিনি ভারতের কনটেক্সট এ। ভয় নেই, এই সিনেমা দেখার জন্য আপনাকে হ্যামলেট না পড়লেও চলবে। হ্যামলেট না পড়লে তো ভালো লাগবেই, হ্যামলেট পড়ে এই সিনেমা দেখলেও আপনি মুগ্ধ হবেন।
হ্যামলেট এ শেক্সপিয়ার দেখিয়েছেন ডেনমার্ক এর কাহিনী, সেটা হায়দারে কাশ্মির এর কাহিনী । ডেনমার্ক আর নরওয়ে এর যুদ্ধ এখানে হয়েছে কাশ্মিরের স্বাধীনতা বিতর্ক। কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামীদের চিকিৎসা করার অপরাধে হায়দারের ডাক্তার পিতাকে ভারতীয় সেনাবাহিনী গুম করে। বাবাকে খুঁজতে এসে হায়দার জানতে পারে, সেনাবাহিনী তার বাবাকে হত্যা করেছে। আরো জানতে পারে, এই ষড়যন্ত্রের পিছনে আছে স্বয়ং তার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষী চাচা। তার চাচা সেনাবাহিনীর সহায়তায় জনগণের সাথে বেইমানি করে ক্ষমতায় বসে, বিয়ে করে হায়দারের মাকে। এমন সময় সিনেমাতে আসেন একজন বিচিত্র ব্যক্তি। তার ব্যক্তিত্বের মত তার নামটাও বিচিত্র – “রুহদ্বার”। সে হায়দার এর সাথে দেখা করে তাকে জানায়- হায়দার এর বাবা আর নিখোঁজ নেই, তিনি এখন মৃত।
ষোড়শ শতাব্দির ডেনমার্কের কাহিনী ২০১৪ তে কাশ্মিরে এসে গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার প্রধান কারণ সম্ভবত বিশাল ভরদ্বাজ এবং বাশারাত পীর এর চিত্রনাট্য লেখনী। আর বিশালের ডিরেকশন নিয়ে বলার কিছু নাই নতুন করে, তার আগের দুইটি সিনেমা যেগুলো শেক্সপিয়ারের সাহিত্যের অবলম্বনে বানানো- ওমকারা আর মকবুল- সেই দুটোকে তিনি হায়দার দিয়ে ছাড়িয়ে গেছেন।
সিনেমার সবচেয়ে ভালো দিক সম্ভবত এর ভারসাম্যতা- চিত্রনাট্য থেকে শুরু করে প্রতিটা ক্ষেত্রে। সব জিনিস অনেক মাপা- যতটুকু দরকার, ঠিক ততটুকু- এক ইঞ্চি বেশি না, কমও না। সিনেমেটোগ্রাফি দারুণ সিনেমার- কাশ্মিরের সৌন্দর্য নতুন করে আবিষ্কার করা যায়।
আইএমডিবি রেটিং এখন পর্যন্ত ৮.১ , যদিও রেটিং দিয়ে মাস্টারপিস বিবেচনা করা কোনভাবে কাম্য নয়। হায়দার ব্যবসাসফল না হলেও মনে হয় খুব একটা সমস্যা হত না- যেই জিনিস মন জয় করে নেয়, সেটা বক্স অফিস জয় না করলেও খুব একটা সমস্যা নেই। ইটস অ্যা মাস্টারপিস- কোন যুক্তিতেই মিস করার মতো সিনেমা হায়দার না।
রিভিউ করেছেনঃ Syed Nazmus Sakib
This website uses cookies.