সিরিয়াল কিলিং জনরার ইতিহাসে অন্যতম জনপ্রিয় এবং সফল মুভি হলো সেভেন (Se7en)। আইএমডিবি লিস্টে যার অবস্থান টপ ২০-তে। পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ডেভিড ফিঞ্চার (David Fincher)। যাকে নিঃসন্দেহে অসাধারণ একজন প্রতিভাবান পরিচালক বলা যায়। আট-দশ জন্য সাধারণ পরিচালকের মাশালা টাইপের মুভি রেখে খুবই সেন্সিটিভ এবং আন্ডারেটেড মুভি/সিরিজ নিয়ে তাকে কাজ করতে দেখা যায়। সেরকমই একটা সিরিজ Mindhunter, সারা জীবনে যে পরিমাণ সিরিয়াল কিলারের মুভি দেখবেন তার সবকিছুকে হার মানিয়ে দিবে এই এক সিরিজ। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, তার দক্ষতা নিয়ে কোন সন্দেহ রাখা যায় না।
১২৭ মিনিটের এই মুভিটি পরিচালনা করেছেন ডেভিড ফিঞ্চার। ক্রাইম, ড্রামা, মিস্ট্রি, থ্রিলার জনরা গুলো নিয়ে এই মুভিটি নির্মিত হয়েছে ১৯৯৫ সালে। সেভেন মুভিটি হলিউড ইন্ডস্ট্রীর। সেভেন মুভিটি আইএমডিবিতে ১৪,২৪,৩২৩ ভোট পেয়ে ৮.৬/১০ রেটিং পায়। মুভিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন মরগান ফ্রিম্যান, ব্র্যাড পিট।
মুভিঃ সেভেন
ইন্ডাস্ট্রিঃ হলিউড
ভাষাঃ ইংলিশ
দেশঃ আমেরিকা
রানটাইমঃ ১২৭ মিনিট
রিলিজ সালঃ ১৯৯৫
আইএমডিবি রেটিংঃ ৮.৬/১০
পার্সোনাল রেটিংঃ ৮.৫/১০
পরিচালকঃ ডেভিড ফিঞ্চার
কাস্টঃ মরগান ফ্রিম্যান, ব্র্যাড পিট
জনরাঃ ক্রাইম, ড্রামা, মিস্ট্রি, থ্রিলার
একজন অভিজ্ঞ এবং বিশ্বস্ত ডিটেকটিভ সমারসেট (Morgan Freeman), যে কিনা স্বেচ্ছায় ৭ দিনের ভেতর চলে যাবে অবসরে। গুরত্বপূর্ণ একটা কেসের ডাক পড়ে সমারসেট এবং তার সঙ্গী হিসেবে দেখা যায় একজন তরুণ, বদমেজাজি, নব্য-ডিটেকটিভ মিলস-এর (Brad Pitt)। যারা আইএমডিবির নাম্বার ওয়ান মুভি শশাঙ্ক রিডেম্পশন দেখেছেন তারা নিশ্চয়ই Morgan Freeman-কে চিনে থাকবেন। বয়স এবং চেহারার তোয়াক্কা না করে ইন্ডাস্ট্রিতে লাগাতার যে পরিমাণ সফল মুভি উনি দিয়ে যাচ্ছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। অপরদিকে Brad Pitt বেশ তরুণ এবং জনপ্রিয় একজন তারকা। মুভি দেখার সময় তার অভিনয় আর স্টাইলে আপনি তাকে বারবার নতুন রূপে ফিরে পাবেন। সবমিলিয়ে দু’জনের অসাধারণ অভিনয় মুভিকে এনে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা।
অস্বাভাবিক একটা খুনের তদন্তে ডাক পড়ে দু’জন ডিটেকটিভ সমারসেট এবং মিলসের। একজন খুবই শান্তশিষ্ট, ধীর-মেজাজের এবং অপরজন খুবই উগ্র এবং বদরাগী। তাদের নিজেদের মধ্যে নেই কোনও মতের মিল, তাও গুরত্বপূর্ণ এবং জরুরি অবস্থা সামাল দিতে দু’জনেই চুপিসারে সয়ে যাচ্ছে। অদ্ভুত সেই হত্যার তদন্ত করতে গিয়ে তারা দু’জনেই অবাক। বিশাল আকৃতির দেহের একজন পুরুষকে হত্যা করে খাবার টেবিলে ফেলে রাখা হয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্টের তথ্যানুযায়ী প্রথমে তাকে অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ানো হয়েছে আর তারপর লাথি মেরে পেট ফাটিয়ে দেয়া হয়েছে। এরকম অদ্ভুত আর অজানা খুনের রহস্য বা উদ্দেশ্য কী হতে পারে?
তার কিছুদিনের মধ্যে দেখা যায় আবারও একটি খুন হয়েছে। আগের খুন আর এখনকার খুনের মধ্যে মিল একটাই তা হলো, খুনি লাশের আশেপাশে একটা করে শব্দ এবং একটা করে নির্দিষ্ট লাইন লিখে দিয়ে গেছে।
পরপর সংগঠিত এসব খুনের ধারা দেখে সমারসেটের মনে পড়ে খ্রিস্টান ধর্মের ৭ টি মহাপাপের কথা, যা সর্বোচ্চ পাপ বা ক্ষমার অযোগ্য ধরা হয়।
Gluttony – অতিভোজন
Greed – লোভ
Sloth – অলসতা
Lust – লালসা
Pride – অহংকার
Envy – হিংসা
Wrath – ক্রোধ।
পর্যায়ক্রমে একই ধারায় ৫ খুন হয়ে গেছে অথচ খুনি ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে একটা সময়, নানাবিধ রিসার্চ আর নিজ পকেটের অর্থকড়ি খরচ করে তারা খুনির আদলে গিয়েও আর ধরতে পারেনি। কিন্তু হুট করে সারা গাঁয়ে রক্তমাখা অবস্থায় খুনি তাদের সামনে আত্মসমর্পণ করতে চলে আসে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে আটক করা হলে সে তার আইনজীবীর সাথে আগে কথা বলতে চায়। আইনজীবীর মাধ্যমে তাদের জানানো হয় যে বাকি দুইটা খুন সে ইতোমধ্যে করে এসেছে, কিন্তু লাশ কোথায় এভাবে বলবে না। যদি তারা দু’জন ডিটেকটিভ তার সাথে নির্ধারিত পথে যায় তবেই লাশের দেখা পাবে। বাধ্য হয়ে এখানে সায় দেয়া ছাড়া কোনও উপায়ন্তর না দেখে তারা রওনা হয় খুনিকে সাথে করে।
খুনি তার পূর্বপরিকল্পিত পথ অনুসারে তাদেরকে শহরের বাইরে জনমানবহীন এক অঞ্চলে নিয়ে যায়। তারা যেতে না যেতেই দূর থেকে এক লোক ভ্যানে করে তাদের জন্য একটা পার্সেল নিয়ে আসে। যে পার্সেলের ভেতরেই লুকিয়ে আছে ৭ খুনের এবং মুভির মূল রহস্য। অন্যান্য সিরিয়াল কিলার মুভিতে ভিন্নতা দেখা গেলেও এখানে আসলে কার জয় হয়? সিরিয়াল কিলার নাকি ডিটেকটিভের? জানতে হলে দেখে ফেলুন জনপ্রিয় এই মুভিটি।
পছন্দের মুভি বারবার আসে না, একবারই আসে৷ আর যখন আসে তার রেশ রেখে যায় আজীবন। বিশেষ করে এন্ডিং এর কথাটা বলতেই হয়, এরকম থমকে যাওয়ার মতো এন্ডিং যেখানে রয়েছে তা কী আর সহজে ভুলে যাওয়া যায়। পরিশেষে বলব, সিরিয়াল কিলিং মুভি যাদের পছন্দ তাদের জন্য চোখ বন্ধ করে মাস্টওয়াচ মুভি বলা যায়।
This website uses cookies.