মুভি

রাতসাসন (Raatchasan) – ২০১৮ মুভি রিভিউ (সাউথ ইন্ডিয়ার অন্যতম সেরা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার মুভি)

14আজকে কথা বলব সাউথ ইন্ডিয়ার অন্যতম সেরা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার মুভি রাতসাসান নিয়ে। কেন সেরা বলছি তা একটু পরেই জানতে পারবেন। তবে যদি আইএমডিবি রেটিং এর কথা বলি, তবে বলতে হচ্ছে, রাতসাসান বর্তমানে ভারতের টপ আইএমডিবি রেটেড মুভির তালিকায় দুই নাম্বার অবস্থানে আছে। আর প্রথমে আছে আমাদের বাঙালির পরিচিত মুভি পথের পাঁচালি। ভারতের এত এত বিখ্যাত মুভি থাকতে রাতসাসানকেই কেন নাম্বার দুইয়ে রাখা হয়েছে? কারণ এখানে কী নেই! উল্লেখ করা হয়েছে একজন মানুষের স্বপ্নের কথা, দেখতে পাবেন এক সুখী পরিবারকে, কিছু অব্যক্ত ভালোবাসা, শৃঙ্খলার অনিয়ম, সমাজের অসমতায়ন সহ নানান দিকে ফুটে উঠেছে এই এক মুভিতেই।

রাতসাসন মুভি ইনফো

মুভিটি পরিচালনা করেছেন বিখ্যাত পরিচালক রাম কুমার। আর এই মুভিতে বিশেষ চরিত্রে ছিলেন বিষ্ণু বিশাল, আমালা পল, সারাভানান। তামিল ইন্ডাস্টীর অন্যতম সেরা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার মুভি এটি। ছাড়াও আমরা আরো কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছি এই মুভির বিষয়ে। যেমনঃ

মুভিঃ রাতসাসন
ইন্ডাস্ট্রিঃ তামিল 
ভাষাঃ তামিল 
দেশঃ ভারত
রানটাইমঃ ১৭০ মিনিট
রিলিজ সালঃ ২০১৮
আইএমডিবি রেটিংঃ ৮.৭/১০
পার্সোনাল রেটিংঃ ৮.৫/১০
পরিচালকঃ রাম কুমার
কাস্টঃ বিষ্ণু বিশাল, আমালা পল, সারাভানান
জনরাঃ অ্যাকশন, ক্রাইম, থ্রিলার

রাতসাসন মুভিটির প্রধান চরিত্র

স্বপ্ন মানুষকে জীবনের সফল পথ দেখায়। কিন্তু সমাজের বিশৃঙ্খল আর অনিয়ম ব্যক্তিদের খপ্পরে আমাদের সেই স্বপ্ন আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না। প্রতিনিয়ত ভেঙ্গে যায় হাজারও যুবক-যুবতীর স্বপ্ন। তেমনি একজন তরুণ যার নাম অরুণ। বহু ক্রোশ পাড়ি দিয়ে জমিয়েছে সে স্বপ্নের রঙ কাটি, ইচ্ছা তার মুভি ডিরেক্টর হওয়ার। সেজন্য লাগাতার সংগ্রহ করেছে অসংখ্য সিরিয়াল কিলিং এর খুঁটিনাটি তথ্যসূত্র। প্রয়োজনের স্বার্থে পত্রিকা থেকে কেটে আলাদা করে রেখেছে সেই অংশ। আর তার এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে রচনা করেছে এক মুভি স্ক্রিপ্ট। কিন্তু তার এই রসহীন স্ক্রিপ্ট দেখে প্রডিউসাররা মুভি বানাতে নারাজ। শত চেষ্টায়ও যেন কোনও কূল-কিনারা খুঁজে পাচ্ছে না। আর এই অসাধারণ চরিত্রটিতে অর্থাৎ কেন্দ্রীয় চরিত্রে অরুণ হিসেবে অভিনয় করেছেন বিষ্ণু বিশাল। অসাধারণ ছিল তার অভিনয়, অবশ্য তার অভিনয়ের গন্ডি সে আরও আগেই তার অন্যান্য মুভিতে স্পষ্ট ছাপ রেখে এসেছে। আর তার বিপরীতে নায়িকা হিসেবে দেখা যাবে অ্যামালা পালকে। তামিল নায়িকাদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় এবং কিউট একজন নায়িকা।

রাতসাসন মূল প্লট

মুভির শুরুতেই দেখা যায় দু’জন বয়স্ক পুরনো বন্ধুর রাস্তায় দেখা, যেখানে একজনের হাতে রাখা বিশেষ কুকুর নিয়ে তারা আলোচনা করছে। কিন্তু পরক্ষণেই সেই কুকুর তাদের কাছ থেকে দৌড়ে চলে যায় পাশেই নদীর তীরে রাখা এক ড্রেইনের মুখে। কুকুরকে ধরতে তারাও পিছু পিছু ছুটে যায়, আর চোখে পড়ে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় এক লাশ। ফরেনসিক রিপোর্টের তথ্যানুযায়ী লাশটি ছিল ১৫ বছর বয়সী এক তরুণীর। যার মুখের বিভিন্ন অংশ নির্দিষ্ট স্টাইলে বিকৃত করা এবং যোনীপথ বাজেভাবে কাঁটা। হৈচৈ পড়ে যায় পুরো শহরে। অপরদিকে আমাদের অরুণ তার স্বপ্ন থেকে ছিটকে বাধ্য হয়ে চলে যায় তার বোনের বাসায়। যেখানে তার দুলাভাই যে কি না একজন পুলিশ, তার সুপারিশক্রমে সেও বনে যায় একজন পুলিশ।

Related Post

কিছুদিন পর যখন একটা অভিযোগ আসে পুলিশের কাছে যে তাদের ১৫ বছর বয়সী স্কুলছাত্রী মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে তাদের কাছে একটা বাক্স কে যেন রেখে গেছে, যার ভেতরে একটা গলাকাটা পুতুল। অন্যান্য পুলিশ অফিসাররা যখন সাধারণ কেস ভেবে তদন্ত করতে শুরু করে, তখন অরুণের মাথায় আসে, কিছুদিন পূর্বের সেই খুনের কথা। আগের খুনে মেয়েটির মুখ যেভাবে বিকৃত করা হয়েছিল, এই পুতুলেও ঠিক তাই করা হয়েছে। তারপর অরুণের আর বুঝতে বাকি রইলো না যে এটা নিঃসন্দেহে কোনও সিরিয়াল কিলারের কাজ। বারবার চেষ্টা করে তার এই তথ্যপ্রমাণ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বুঝাতে পারছিল না৷ উল্টো তাকে কেস থেকে দূরে থাকার আদেশ দিয়েছে। কিন্তু তার এই তথ্যপ্রমাণ সত্য প্রমাণিত হতে খুব একটা সময় লাগেনি, অল্প কিছুক্ষণ বাদেই কল আসে আরও একটা লাশ পাওয়া গেছে, উদ্ধার করতে গিয়ে দেখা যায়, লাশের হত্যাপ্রণালী সব আগের মতোই। কিন্তু এই কিলারকে আটকাতে গেলে প্রথমে নির্দিষ্ট কোনও ক্লো লাগবে যা তাদের কাছে নেই। বলতে গেলে অন্ধকারে আকাশের দিকে চেয়ে আগে বাড়ানোর মত কেসকে সামনে নিয়ে যেতে হবে। এদিকে একের পর এক নৃশংস হত্যা চলতেই থাকে। আর এরকম ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে যদি খোদ পুলিশ কর্মকর্তার কেউ হঠাৎ উধাও হয়ে যায়? এতক্ষণ উৎকন্ঠা নিয়ে মুভি দেখতে থাকলেও এবার হয়ে যাবেন ইমুশনাল।

গড়গড় করে ঝরে পড়বে চোখ থেকে পানি। এ যেন আপন কেউ হারিয়ে গেছে সিরিয়াল কিলারের হাতধরে। শেষ পর্যন্ত অরুণ কি পারবে সেই কিলারকে ধরতে? সেই কিলারের অতীত কী ছিল, কেন-ই বা সে এমন নৃশংস খুনের পথে পা বাড়াল? জানতে হলে দেখে ফেলুন অসাধারণ এই থ্রিলার মুভিটি।

নিজস্ব মতামত

মুভির মাঝ দিকে খানিকটা বিরক্তি চলে আসা যেমন মুভিরই একটা অংশ।
কিন্তু এই মুভিতে আপনি দম ফেলার একটুও সুযোগ পাবেন না। প্রতিটা খুন আর রহস্য আপনাকে ভাবাতে বাধ্য করবে। আর ইমুশনের জায়গাটা তো ছিল একেবারে কঠোর। অবশ্য কিছু জায়গায় বেশ কাকতালীয় কিছু ঘটনা ঘটে যায়, যা মুভির সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে হয়তো ব্যবহার করতে হয়েছে, তাই আমি নেগেটিভ মন্তব্য করতে নারাজ। আর হ্যাঁ, সবকিছু মিলিয়ে আমি বলব, একেবারে অসাধারণ।

ধন্যবাদ।

View Comments

  • বাংলা সাবটাইটেল রিকুয়েস্ট।

    Movie : Ghost Ship (2002)
    imdb : 5.5/10

    হিন্দি বুজিনা,, বাংলা সাব ই ভরসা
    প্লিজ সাহায্য করুন মুভিটি দেখতে

  • মুভিটার সাব এর সাথে মুভির কথাবার্তা মিল নাই,,,মানে কথা বলার আগেই সাব চলে আসে,,,,এটা কি আমার প্রবলেম নাকি আপনাদের,,,,, এটা ঠিক করবো কিভাবে,,,

This website uses cookies.