মুভি

মিরাক্কেল ইন কল নং সেভেন (Miracle in Cell No. 7) মুভি রিভিউ (২০১৩ সালের কোরিয়ান ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সফল মুভি)

সাধারণত কোরিয়ান ইন্ডাস্ট্রি জনপ্রিয় তাদের থ্রিলার মুভি এবং রোমান্টিক ড্রামাগুলোর জন্য। কিন্তু তারা যে এত অসাধারণ কোনো ইমুশনাল ড্রামা মুভি করতে পারে তা এই মুভি না দেখলে বুঝতেও পারবেন না। ২০১৩ সালে প্রকাশিত মিরাক্কেল ইন কল নং সেভেন মুভিটিকে কোরিয়ান ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সফল মুভি বলা হয়। শুধু কোরিয়াতেই নয়, পাশাপাশি তুর্কিতেও এই মুভি রিমেক করে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। কেউ কেউ আবার কোরিয়ান ইন্ডাস্ট্রিতে মুভি দেখা শুরুই করেছে এই মুভি দিয়ে।

মিরাক্কেল ইন কল নং সেভেন মুভি ইনফো

মুভির পরিচালনায় ছিলেন হাওয়ান-কিং লি, তার অন্যান্য মুভির মাঝে আমার আরও একটা ভালো লাগার মুভি হলো দ্য গাই ওয়াজ কুল।মিরাক্কেল ইন কল নং সেভেন মুভিটি  প্রথমদিকে মুভি দেখে মনে হবে সাধারণ কোন মুভি। কিন্তু যতই সময় গড়াবে আপনিও চরিত্রের সাথে মিশে যেতে থাকবেন।

মুভিঃ মিরাক্কেল ইন কল. নং সেভেন
ইন্ডাস্ট্রিঃ সাউথ কোরিয়া
ভাষাঃ কোরিয়ান
দেশঃ দক্ষিন কোরিয়া
রানটাইমঃ ১২৭ মিনিট
রিলিজ সালঃ ২০১৩
আইএমডিবি রেটিংঃ ৮.২/১০
পার্সোনাল রেটিংঃ ৮.৫/১০
পরিচালকঃ হাওয়ান-কিং লি
কাস্টঃ সেউং-রিং রিউ, সো কাল কল
জনরাঃ কমেডি, ড্রামা

মিরাক্কেল ইন কল নং সেভেন কেন্দ্রীয় চরিত্র

একটা মেয়ের কাছে তার সবচেয়ে প্রিয়জন হলো তার বাবা। যার কাছে হেসে খেলে সে তার সমস্ত আবেগ মন খুলে ভাগ করে নিতে পারে। আর আজকের এই মুভিতে বিশেষভাবে দেখানো হয়েছে একজন বাবার প্রতি তার মেয়ের ভালোবাসার অপরিসীম মহত্ত্ব। বাবা চরিত্রে অভিনয় করেছেন Seung-ryong Ryu আর মুভির সবচেয়ে আকর্ষণীয় চরিত্র Seung-ryong Ryu মেয়ে হিসেবে অভিনয় করেছেন So Won Kal। তাদের অভিনয়ের পুরুত্ব মাপতে হলে বলতে হবে আপনি মুভি দেখার সময় একবারও টের পাবেন না যে কোনও মুভি দেখছেন। মনে হবে গল্পের সব চরিত্র যেন আপনার সামনে জীবন্ত খেলে বেড়াচ্ছে।

মিরাক্কেল ইন কল নং সেভেন মুভির মূল কাহিনী

একজন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বাবা, পৃথিবীতে যার আপনজন বলতে একজনই, সে হলো তার একমাত্র মেয়ে Ye-seung.। একজন বাবা যত দূর্বল বা সবলই হোক না কেন, তার মেয়ের কাছে সে একজন হিরো, একজন বাস্তববাদী হিরো। যে তার সন্তানের জন্য পুরো পৃথিবীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে। এখন প্রশ্ন আসতে পারে সে বাবা যদি স্বাভাবিক না হয়? আমি বলব তাতে কী? বাবা কখনো পরাজয় মানে না, হোক সে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী, তার সন্তানের প্রতি তার ভালোবাসা অটুট থাকবে আজীবন, প্রয়োজনে হাসতে হাসতে ত্যাগ করে দিবে জীবনের শেষ সম্বলটুকুও।

Related Post

 

তেমনি একজন বাবাকে নিয়ে লেখতে যাচ্ছি আজ। তার একমাত্র মেয়ে Ye-seung এর Sailor Moon নামের একটি স্কুলব্যাগ পছন্দ হয়ে যায়। এদিকে অসহায় বাবার সেই ব্যাগ কেনার মতো সামর্থ্য নেই। কিন্তু সে তার মেয়েকে হতাশ করতে রাজি না, তাইতো অল্প অল্প করে জমাতে থাকে স্কুলব্যাগ কেনার টাকা, যেন মাস শেষে খানিক কষ্ট হলেও কিনে দিতে পারে।
তারা প্রতিদিন যে দোকানে এসে ব্যাগটি দেখে যায়, সে দোকান থেকে হঠাৎ একদিন এক কমিশনারের মেয়ে এসে ব্যাগটি কিনে নিয়ে যায়। সারা এলাকায় তন্নতন্ন করেও আর কোথাও সেই ব্যাগ যে নেই। নিরুপায় বাবা মেয়ের কান্না থামাতে দিশেহারা হয়ে এদিকসেদিক ছুটে বেড়ায়, পিছু নেয় সেই কমিশনারের মেয়ের। কিন্তু আচমকা সেই মেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। সন্দেহের বশে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে জেলে। আদৌও সে অপরাধ করেছে কিনা জানা নেই কিন্তু মেয়েকে বাঁচাতে নিজেই স্বীকার করে নেয় যে খুন সে নিজে করেছে।

 

শাস্তি হিসেবে তাকে রাখা হয় সেল নাম্বার ৭ এ। যেখানে এক পাতি মাস্তান সহ আরও বেশ কয়েকজন রয়েছে। প্রথমে যদিও তাদের সাথে খুব একটা ভালো সম্পর্ক ছিল না, কিন্তু ধীরে ধীরে তারাও আপন হয়ে যায়। এদিকে Ye-seung তার শিক্ষিকার সাথে করে লুকিয়ে চলে আসে জেলখানায়। আর ঠিক তার পর থেকেই ঘটতে থাকে সকল অনাকাঙ্ক্ষিত মিরাকেল। এরপর প্রতিটা মুহুর্ত যেন আপনাকে আর হাসি থামাতেই দিবে না। দারুণ এই পিচ্চি মেয়ের অভিনয় আর স্টাইল দেখে আপনি বারবার মুগ্ধ হয়ে যাবেন। কিন্তু গল্প কি সেই জেলখানাতেই শেষ? নাকি সে পারবে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে বেরিয়ে আসতে?

মুভিটি নিয়ে নিজের মতামত

প্রথমদিকে মুভি দেখে মনে হবে সাধারণ কোনও মুভির কাহিনি। কিন্তু যতই সময় গড়াবে আপনিও চরিত্রের সাথে মিশে যেতে থাকবেন। একটা সময় এসে চাইলেও আর চোখের পানি ধরে রাখতে পারবেন না। এই মুভি দেখেছে অথচ কাঁদেনি, সেরকম লোক পাওয়া বড্ড মুশকিল। যদিও কেউ থেকে থাকে তবে সে পাষাণ নয়তো মুভির কাহিনিই বুঝতে পারেনি। ফ্যামিলি ড্রামা যারা পছন্স করেন তাদের জন্য মাস্টওয়াচ বলব।

This website uses cookies.